স্বপ্নের জগতে আমার গল্প।

আমার পরিচয়।

আমার নাম ইমরান আলী। আমি পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার বেলডাঙা থানার বাসিন্দা। শৈশব কেটেছে মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে। বর্তমানে আমি WBSEDCL-এর অধীনে একজন ইলেকট্রিক কন্ট্রাক্টরের দায়িত্ব পালন করছি।

শিক্ষাগত যোগ্যতা।

আমাদের গ্রামে একটি শিশু মাদ্রাসা রয়েছে, যেখানে পাঁচ বছর বয়সে প্রথম ভর্তি হই। সেখানে তিন বছর পড়াশোনার পর গ্রামের আরেকটি সরকারি মাদ্রাসা—বেলডাঙা দারুল হাদিস সিনিয়র মাদ্রাসা—তে ভর্তি হই।

পড়াশোনায় খুব ভালো না হলেও কখনোই পড়া ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবিনি। এই মাদ্রাসা থেকে আমি আলেম (মাধ্যমিক) ও ফাজেল (উচ্চ মাধ্যমিক) সম্পন্ন করি। এরপর আলিয়া ইউনিভার্সিটিতে কামেল (স্নাতক) কোর্সে ভর্তি হয়ে তিন বছরের মধ্যে পড়াশোনা শেষ করি।

আলেম পাস করার পর থেকেই কাজ শুরু করেছিলাম। সম্ভবত কাজের চাপের কারণেই কামেলের পর আর পড়াশোনা চালিয়ে যাইনি। এর পাশাপাশি কম্পিউটার ডিপ্লোমা, অ্যাকাউন্টিং এবং পুষ্টি বিষয়ক কিছু কোর্সও সম্পন্ন করেছি।

হেদায়েতের পথে আমি।

যদিও মাদ্রাসায় পড়েছি, আমাদের জীবনযাত্রা ছিল সাধারণ ছেলেদের মতোই। কারণ আমরা আবাসিক ছাত্র ছিলাম না—প্রতিদিন বাড়ি থেকে যাতায়াত করতাম। ফলে মাদ্রাসার চেয়ে গ্রামের পরিবেশের প্রভাব বেশি ছিল আমাদের ওপর।

ইসলামিক শিক্ষা গ্রহণ করলেও তা জীবনে প্রয়োগ করতাম না। আমার ইসলামি চর্চা বলতে ছিল শুধু সপ্তাহে একদিন জুমার নামাজ, আর রমজানে রোজা ও নামাজ।

পড়াশোনা শেষ করার দুই-তিন বছর পর বুঝতে পারলাম—আমাকে কোরআন ধীরে ধীরে বুঝে পড়া প্রয়োজন। তাই কোরআন পড়া শুরু করলাম নতুনভাবে, জীবনকে বোঝার উদ্দেশ্যে। দুই মাসের মধ্যেই পুরো কোরআন বুঝে পড়া শেষ করলাম।

এই অভিজ্ঞতা আমার জীবন বদলে দিল। আগে যেখানে নিয়মিত নামাজ পড়তাম না, এখন তা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। আচরণেও পরিবর্তন এসেছে—সবই কোরআনের প্রভাব।

স্বপ্নের পথে আমার নতুন জীবন।

কোরআন পড়ার সময় এক নতুন অনুভূতি হচ্ছিল—মনে হচ্ছিল এই কিতাব আগে কখনো পড়িনি। এর মধ্যে সূরা ইউসুফ আমাকে বিশেষভাবে প্রভাবিত করেছিল। এই সূরায় ইউসুফ (আঃ)-এর জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সংগ্রামের কাহিনি বর্ণিত হয়েছে।

আল্লাহ তাঁকে স্বপ্ন ব্যাখ্যা করার জ্ঞান দিয়েছিলেন। ঠিক এই জ্ঞানের কারণেই ইউসুফ (আঃ) মিসরের আজিজ হয়েছিলেন এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পান।

এই কাহিনি আগে না জানলেও, পড়ে আমি স্বপ্নের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ি। প্রায় সাত-আট বছর আগে থেকেই স্বপ্ন ব্যাখ্যার প্রতি আমার আগ্রহ শুরু।

এর দুই-তিন মাস পর আমার বিয়ে ঠিক হয়, কিন্তু অর্থনৈতিকভাবে তখনো স্বাবলম্বী ছিলাম না। এই সময়ে আমি একটি স্বপ্ন দেখি—এবং জীবনের প্রথমবারের মতো তা কোরআনের আলোকে ভাবতে শুরু করি।

এরপর থেকে স্বপ্ন ও আমার নতুন জীবনের অভিজ্ঞতা ধারাবাহিকভাবে আপনাদের সঙ্গে ভাগ করে নেব, ইনশাআল্লাহ।

পড়ুন- আমার প্রথম স্বপ্ন। 

স্বপ্ন সম্পর্কিত প্রশ্নোত্তর (FAQ)

১. আমি একটি অদ্ভুত স্বপ্ন দেখেছি, এখন কী করব?

আপনি স্বপ্নের ব্যাখ্যার জন্য আমাদের সাইটে পাঠাতে পারেন। আমাদের অভিজ্ঞ ব্যাখ্যাকারী কুরআন ও হাদিসের আলোকে উত্তর প্রদান করবেন।

২. সকল স্বপ্ন কি সত্য হয়?

না, ইসলামী দৃষ্টিকোণে স্বপ্ন তিন প্রকার: আল্লাহর পক্ষ থেকে, শয়তানের পক্ষ থেকে, এবং ব্যক্তির নিজের চিন্তা থেকে।

৩. স্বপ্নে মৃত ব্যক্তি দেখার অর্থ কী?

স্বপ্নে মৃতকে দেখা বিভিন্ন অর্থ বহন করতে পারে। এটি মৃত ব্যক্তির অবস্থা বা জীবিত ব্যক্তির বার্তা হতে পারে। নির্ভর করে স্বপ্নের প্রেক্ষাপটে।

৪. ব্যাখ্যার জন্য স্বপ্ন পাঠাতে হলে কী করতে হবে?

আপনি আমাদের "স্বপ্ন পাঠান" বাটনে ক্লিক করে আপনার স্বপ্ন লিখে পাঠাতে পারেন। আমরা তা যাচাই করে ব্যাখ্যা পাঠিয়ে দিব।

৫. স্বপ্নে রাসুল (সা.) কে দেখা কি সত্য?

হ্যাঁ, হাদিস অনুযায়ী, শয়তান রাসুল (সা.) এর রূপ ধারণ করতে পারে না। তাই কেউ যদি তাঁকে দেখে, তবে সেটি সত্য স্বপ্ন ধরা হয়।

৬. সাইটে দেওয়া ব্যাখ্যাগুলো কিসের উপর ভিত্তি করে?

আমাদের সব ব্যাখ্যা কুরআন, হাদিস এবং অভিজ্ঞ ইসলামিক ব্যাখ্যাকারীদের ব্যাখ্যার উপর ভিত্তি করে প্রদান করা হয়।